নখকুনি থেকে মুক্তির সহজ ঘরোয়া উপায়


 নখকুনির যন্ত্রণা সাধারণত সকলকেই একবার বা একাধিকবার ভোগ করতে হয়| আমাদের হাতের ও পায়ের নখে ফাঙ্গাস জমে এই ধরণের সমস্যা দেখা দেয়| হাত ও পায়ের ঠিক মত যত্ন না নিলে বা পরিষ্কার না রাখলে এই ধরণের সমস্যা হতে পারে| সারাদিন আমাদের হাত ও পা নানা ধুলো-বালি-জল-কাদা, মশলা, সাবান কত কিছুরই না সংস্পর্শে আসে| ঠিক মত যদি যত্ন না নেওয়া হয় তাহলেই বিপদ| নখকুনি অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক একটি সমস্যা তাই এটি সারানোর বা এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তির কতগুলি ঘরোয়া উপায় আজ আপনাদের জানাবো|

নখকুনি আসলে কি?

নখকুনি আপনার হাতের ও পায়ের নখে ও নখের আশেপাশে চামড়ার অংশে হয়ে থাকে| এর ফলে নখের চারপাশ লাল হয়ে ফুলে ওঠে| অত্যন্ত যন্ত্রণা হয়| এছাড়া এর ফলে নখগুলি মোটা হয়ে যায়| নখের ভেতর ব্যথা হয়, কখনো নখ হলুদ বা কালো রঙের হয়ে যায়| এই ধরণের রোগ জিনগত কারণে হতে পারে|

কীভাবে সারিয়ে তুলবেন?

হাতে পায়ের নখের যত্ন নেওয়ার সাথে সাথে নখকুনি সারানোর জন্য কিছু ঘরোয়া উপায় কাজে লাগাতে পারেন| দেখে নিন সেগুলি কি কি ও ঠিক কেমন ভাবে আপনি সেগুলি ব্যবহার করবেন|

১. নারকেল তেল

নারকেল তেল এই নখকুনি সারিয়ে তোলার সহজ ও কার্যকরী উপায়| নারকেল তেল সাধারণত আমাদের সবার ঘরেই থাকে| তাই আপনার যদি নখকুনি হয়ে থাকে তাহলে কীভাবে নারকেল তেল প্রয়োগ করবেন দেখে নিন|


পদ্ধতি


স্নান করার আগে বা রাতে শুতে যাওয়ার আগে আপনার হাতে ও পায়ের নখে ও তার চারপাশে ব্যথা হওয়া অংশে নারকেল তেল লাগান| ১৫- ২০ মিনিট পর হিমালয়া বা ওলে ফেস ওয়াশ দিয়ে ভালো করে আপনার হাত ও পায়ের নখ ও তার আশেপাশের অংশ ধুয়ে ফেলুন| এতে আপনি আরাম পাবেন ও খুব তাড়াতাড়ি যন্ত্রণা সেরে যাবে|


২. অলিভ অয়েল

অলিভ অয়েলও আপনার নখকুনি সারিয়ে তুলতে ও এর যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করে| এছাড়া নিয়মিত অলিভ অয়েল নখে ও তার চারপাশে লাগালে এই ধরনের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা উপকরণ


২ চামচ অলিভ অয়েল, ২ চামচ পাতিলেবুর রস।


পদ্ধতি


অলিভ অয়েল ও লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে নখ ও তার আশেপাশের অংশে হালকা করে ম্যাসাজ করুন| অলিভ অয়েল ঠান্ডা হয় তাই এটি খুব তাড়াতাড়ি যন্ত্রনায় আরাম দেয়| দিনে ৩ থেকে ৪ বার অলিভ অয়েল লাগালে আপনি ভালো ফল পাবেন|


৩. বেকিং সোডা

বেকিং সোডা নখের যত্ন নিতে বা নখকুনি সরিয়ে তোলার ক্ষেত্রে খুব উপকারী একটি ঘরোয়া উপাদান|নখ ও তার চারপাশের যে কোনো রকম ইনফেকশন এই বেকিং সোডার ব্যবহারে খুব তাড়াতাড়ি সেরে ওঠে| দু ভাবে আপনি বেকিং সোডা ব্যবহার করতে পারেন নখকুনি সারাতে|


প্রথম পদ্ধতি


প্রথমে হালকা গরম জলে অল্প শ্যাম্পু মিশিয়ে হাত ও পায়ের নখ ধুয়ে নিন| একটি পরিষ্কার টাওয়াল দিয়ে হাত ও পায়ের পাতা ভালো করে মুছে নিন| এবার বেকিং সোডা ও জল মিশিয়ে পেস্ট মত বানিয়ে আপনার হাতে বা পায়ে যেখানে নখকুনি হয়েছে সেখানে লাগিয়ে রাখুন ১৫ -২০ মিনিট| এবার ঠান্ডা জলে হাত বা পা ধুয়ে ফেলুন| এই পদ্ধতিতে দিনে ৩-৪ বার বেকিং সোডা ব্যবহার করলে আপনি আরাম পাবেন|


দ্বিতীয় পদ্ধতি


প্রথমে যেখানে নখকুনি হয়েছে সেই অংশটি পরিষ্কার করে টাওয়াল দিয়ে মুছে নিন| এবার ঠান্ডা জলে ২-৩ চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে সেই জলে হাত বা পায়ের পাতা চুবিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট মত| এতেও আপনি আরাম পাবেন|


৪. অ্যাপল সিডার ভিনিগার



এই উপাদানটিও নখকুনি হলে তা সারিয়ে তোলে খুব সহজেই| এছাড়া এর নিয়মিত ব্যবহার আপনার হাত ও পায়ের নখকে সুরক্ষিত রাখে| বাজারে আপনি খুব সহজেই এই উপাদানটি পেয়ে যাবেন। না হলে অনলাইন আপনাউপকরণ


২ চামচ অ্যাপল সিডার ভিনিগার, ২ চামচ জল।


পদ্ধতি


অ্যাপল সিডার ভিনিগার ও জল মিশিয়ে আপনার ব্যথা হওয়া অংশে ৩০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন| এরপর ঠান্ডা জলে ধুয়ে শুকনো কাপড় দিয়ে ভালো করে মুছে নিন| প্রতিদিন ২-৩ বার ব্যবহার করুন যতদিন না নখকুনি পুরোপুরি সেরে যাচ্ছে|


৫. এপ্সাম লবণ

নখে হওয়া যেকোনো ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রে এপ্সাম লবণ অত্যন্ত উপকারী|


উপকরণ


১ কাপ ভিনিগার, ১ কাপ এপ্সাম লবণ, ৬ কাপ গরম জল।


পদ্ধতি


ভিনিগার, এপ্সাম লবণ ও গরম জল মিশিয়ে নিন| গরম ভাব কিছুটা কমে আসলে তাতে হাত বা পা যেখানে নখকুনি হয়েছে তা চুবিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট| এরপর পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে নিন| দিনে দুবার এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে আপনি খুব তাড়াতাড়ি আরাম পেয়ে যাবেন নখকুনি থেকে

নখকুনি এদের মধ্যে যে কোনো একটি উপাদানের ব্যবহারে সহজেই সেরে যাবে| তবে অনেক সময় অতিরিক্ত বেশি ব্যথা বা ফুলে যাওয়া বিপদজনক হতে পারে| সে ক্ষেত্রে কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শই জরুরী| তবে এই উপায়গুলি অবলম্বন যদি আপনি নিয়মিত ও সঠিক উপায়ে করেন সেক্ষেত্রে আপনি এই ধরনের সমস্যা খুব সহজেই এড়িয়ে চলতে পারবেন|

Post a Comment

Previous Post Next Post